সাহিত্য রস

সবচেয়ে বড় কবিতা, গল্প, ছন্দ এবং গান প্রকাশের ওয়েবসাইট

শনি

1
0

কেন মন্দ গ্রহ বলি নিন্দা তোমা করে
জ্যোতিষী ? গ্রহেন্দ্র তুমি,শনি মহামতি!
ছয় চন্দ্র রত্নরূপে সুবর্ণ টোপরে
তোমার ; সুকটিদেশে পর, গ্রহ-পতি
হৈম সারসন, যেন আলোক-সাগরে !
সুনীল গগন-পথে ধীরে তব গতি।
বাখানে নক্ষত্র-দল ও রাজ-মূরতি
সঙ্গীতে, হেমাঙ্গ বীণা বাজায়ে অম্বরে।
হে চল রশ্মির রাশি,সুধি কোন জনে,—
কোন জীব তব রাজ্যে আনন্দে নিবাসে?
জন-শূন্য নহ তুমি,জানি আমি মনে,
হেন রাজা প্রজা-শূন্য,—প্রত্যয়ে না আসে!—
পাপ,পাপ-জাত মৃত্যু,জীবন-কাননে,
তব দেশে,কীটরূপে কুসুম কি নাশে?

মাইকেল মধুসূদন দত্ত
WRITTEN BY

মাইকেল মধুসূদন দত্ত

মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩) ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে। তার পিতা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন একজন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং মাতা জাহ্নবী দেবী ছিলেন একজন সুশিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনস্ক মহিলা।

মধুসূদন দত্তের শিক্ষাজীবন শুরু হয় সাগরদাঁড়ি পাঠশালায়। পরে তিনি কলকাতার খিদিরপুর স্কুল এবং হিন্দু কলেজে পড়াশোনা করেন। হিন্দু কলেজে পড়াকালীন তিনি ইংরেজি সাহিত্যে আগ্রহী হন এবং ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনা শুরু করেন।

১৮৪৩ সালে মধুসূদন দত্ত খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং মাইকেল নাম গ্রহণ করেন। খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের পর তিনি পাশ্চাত্য সাহিত্যের প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হন এবং বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্য রীতিনীতির প্রবর্তন করেন।

মধুসূদন দত্তের সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে:

* **কবিতা:** "সনেট", "মধুসূদন চরিত", "বীরাঙ্গনা", "চতুর্দশপদী কবিতা"
* **নাটক:** "শর্মিষ্ঠা", "কালিদাস", "মেঘনাদবধ কাব্য", "কৃষ্ণকুমারী", "রুদ্রমহিষ"
* **প্রহসন:** "বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ", "পদ্মাবতী"

মধুসূদন দত্তের সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। তিনি বাংলা সাহিত্যে সনেট, অমিত্রাক্ষর ছন্দ, এবং নাট্যকারের ভূমিকা প্রবর্তন করেন। তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্যকে আধুনিকতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।

মধুসূদন দত্তের সাহিত্যকর্মের কিছু উল্লেখযোগ্য অবদান নিম্নরূপ:

* তিনি বাংলা সাহিত্যে সনেট, অমিত্রাক্ষর ছন্দ, এবং নাট্যকারের ভূমিকা প্রবর্তন করেন।
* তিনি বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতাবাদের প্রবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
* তিনি বাংলা সাহিত্যে নারীবাদের ধারণা প্রবর্তন করেন।

মধুসূদন দত্ত একজন প্রতিভাবান কবি, নাট্যকার, এবং প্রহসন রচয়িতা ছিলেন। তার সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।

মন্তব্য করুন