কাজী নজরুল ইসলাম (২৪ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬) ছিলেন একজন বাঙালি কবি, লেখক, সুরকার, গীতিকার, সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকার, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, চিত্রশিল্পী, স্বদেশী সৈনিক এবং দার্শনিক। তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি, এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে পরিচিত।

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। তার পিতা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন একজন মুসলিম ধর্মপ্রচারক এবং মাতা জাহেদা খাতুন ছিলেন একজন গৃহিণী।

কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষাজীবন শুরু হয় স্থানীয় একটি মসজিদের মক্তবে। ১৯১০ সালে তিনি চুরুলিয়ার স্কুলে ভর্তি হন। ১৯১৪ সালে তিনি স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে বর্ধমানের থানা স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু ১৯১৬ সালে তিনি স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন।

কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ১৯১৭ সালে। তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ছিল “বিদ্রোহী”। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল:

* অগ্নিবীণা
* ভাঙার গান
* ফণীমনসা
* চক্রবাক
* গীতিগুচ্ছ
* সঞ্চিতা
* বিষের বাঁশি
* রেখা
* চিরঞ্জীবী

কাজী নজরুল ইসলামের কবিতাগুলিতে তিনি বিদ্রোহ, প্রেম, দেশপ্রেম, মানবতাবাদ, সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কার ইত্যাদি বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন। তার কবিতাগুলিতে তিনি অত্যন্ত সহজ ও সরল ভাষায় আবেগপ্রবণভাবে বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছেন।

কাজী নজরুল ইসলাম একজন সফল গীতিকারও ছিলেন। তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গান রচনা করেছেন। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গানগুলি হল:

* “আমার সোনার বাংলা”
* “চলো চলো আমরা সবাই মিলে”
* “ওরে বন্ধুরে”
* “প্রলয়শিখা”
* “ধনধান্য পুষ্পভরা”
* “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো”
* “আমার সোনার বাংলায়”
* “মহাবিদ্রোহের প্রথম সূর্য”

কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র।

কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তিনি প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার (১৯৭৬), বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক (১৯৭৬) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর, ১৯৭৮) ভূষিত হন।

কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।