সাহিত্য রস

সবচেয়ে বড় কবিতা, গল্প, ছন্দ এবং গান প্রকাশের ওয়েবসাইট

লক্ষ্মী

হাত -পা- ভাঙ্গা নোংরা পুতুল মুখটি ধুলোয় মাখা,
গাল দুটি তার খাবলা মতন চোখ দুটি তার ফাঁকা-
কোথায় বা তার চুল বিনুনি, কোথায় বা তার মাথা,
আধখানি তার ছিন্ন জামা,গায় দিয়েছে কাঁথা।
পুতুলের মা ব্যস্ত কেবল তার সেবাতেই রত,
খাওয়ান শোয়ান আদর করেন ঘুম ডেকে দেন কত।
বলতে গেলাম “বিশ্রী পুতুল” অমনি বলেন রেগে –
“লক্ষ্মী পুতুল জ্বর হয়েছে তাইত এখন জেগে।”
দ্বিগুন জোরে চাপড়ে দিল “আয় আয় আয়” ব’লে-
নোংরা পুতুল লক্ষ্মী হ’য়ে পড়ল ঘুমে ঢুলে!

সুকুমার রায়
WRITTEN BY

সুকুমার রায়

সুকুমার রায় (১৮৮৭-১৯২৩) একজন বাঙালি শিশুসাহিত্যিক, লেখক, ছড়াকার, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক। তিনি ভারতীয় সাহিত্যে "ননসেন্স ছড়া"র প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত।

সুকুমার রায় ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কটিয়াদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন একজন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক এবং মাতা বিদুনন্দিনী দেবী ছিলেন একজন গৃহিণী।

সুকুমার রায়ের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কটিয়াদি গ্রামে। ১৯০৭ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

সুকুমার রায়ের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ১৯১২ সালে। তার প্রথম প্রকাশিত রচনা ছিল "খোকাবাবুর কেচ্ছা"। তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল:

* আবোল তাবোল
* হযবরল
* পাগলা দাশু
* চলচ্চিত্তচঞ্চরী
* কিত্তনমামা
* অজগরবধ
* বিষাদসিন্ধু
* টেনিস খেলা

সুকুমার রায়ের রচিত ছড়াগুলি ছিল ছোটদের মনোরঞ্জন ও শিক্ষার এক অপূর্ব সমন্বয়। তিনি ছড়ার মাধ্যমে ছোটদের অক্ষর পরিচয়, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ের শিক্ষা দিতেন। তার রচিত ছড়াগুলি ছিল অত্যন্ত সহজবোধ্য, ছন্দময় ও হাস্যরসাত্মক।

সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র।

সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার এবং সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

সুকুমার রায় ১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৫ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য করুন

সম্প্রতি মন্তব্যসমূহ

প্রতি মাসে প্রকাশিত

বিষয় সমূহ