সাহিত্য রস

সবচেয়ে বড় কবিতা, গল্প, ছন্দ এবং গান প্রকাশের ওয়েবসাইট

মীমাংসা

1
0

আজকে হঠাৎ সাত-সমুদ্র তের-নদী
পার হতে সাধ জাগে মনে, হায় তবু যদি
পক্ষপাতের বালাই না নিয়ে পক্ষীরাজ
প্রস্রবণের মতো এসে যেত হঠাৎ আজ-
তাহলে না হয় আকাশ বিহার হত সফল,
টুকরো মেঘেরা যেতে যেতে ছুঁয়ে যেত কপোল।

আর আমি বুঝি দৈত্যদলনে সাগর পার
হতাম; যেখানে দানবের দায়ে সব আঁধার।
মত্ত যেখানে দৈত্যে দৈত্যে বিবাদ ভারি;
হানাহানি নিয়ে সুন্দরী এক রাজকুমারী।
(রাজকন্যার লোভ নেই, -লোভ অলঙ্কারে,
দৈত্যেরা শুধু বিবস্ত্রা ক’রে চায় তাহারে।)

আমি একজন লুপ্তগর্ব রাজার তনয়
এত অন্যায় সহ্য করব কোনোমতে নয়-
তাই আমি যেতে চাই সেখানেই যেখানে পীড়ন,
যেখানে ঝল্‌সে উঠবে আমার অসির কিরণ।
ভাঙাচোরা এক তলোয়ার আছে, (নয় দু’ধারী)
তাও হ’ত তবে পক্ষীরাজেরই অভাব ভারি।
তাই ভাবি আজ, তবে আমি খুঁজে নেব কৌপীন
নেব কয়েকটা বেছে জানা জানা বুলি সৌখিন।।

সুকান্ত ভট্টাচার্য
WRITTEN BY

সুকান্ত ভট্টাচার্য

সুকান্ত ভট্টাচার্য ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি কবি। তিনি ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার অন্তর্গত ঊনশিয়া গ্রামে।

সুকান্ত মাত্র ১১ বছর বয়সে কবিতা লেখা শুরু করেন। তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা "আমার গান" ১৯৩৭ সালের ২৭ অক্টোবর "কিশোর ভারতী" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ "ছাড়পত্র" ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয়।

সুকান্তের কবিতাগুলি সাধারণ মানুষের জীবন ও দুঃখ-কষ্টের কথা বলে। তিনি শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তার কবিতায় মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান উঠে এসেছে।

সুকান্ত ছিলেন একজন প্রগতিশীল কবি। তিনি মার্কসবাদী দর্শনের অনুসারী ছিলেন। তার কবিতায় শ্রমিক-কৃষকের সংগ্রাম, সামাজিক বৈষম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুর উঠে এসেছে।

সুকান্ত ভট্টাচার্য মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৯৪৭ সালের ১৩ মে টি.বি. রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের এক অপূরণীয় ক্ষতি।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের উল্লেখযোগ্য কবিতার মধ্যে রয়েছে:

* ছাড়পত্র
* পূর্বাভাস
* ঘুম নেই
* আমি একদিন তোমার নাম বলব
* কবিতা
* অগ্নিবীণা
* ময়না
* হে নমস্কার
* হে মাটি

সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতাগুলি আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। তার কবিতাগুলি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।

মন্তব্য করুন