সাহিত্য রস

সবচেয়ে বড় কবিতা, গল্প, ছন্দ এবং গান প্রকাশের ওয়েবসাইট

বিদ্রোহের গান

1
0

বেজে উঠল কি সময়ের ঘড়ি?
এসো তবে আজ বিদ্রোহ করি,
আমরা সবাই যে যার প্রহরী
উঠুক ডাক।

উঠুক তুফান মাটিতে পাহাড়ে
জ্বলুক আগুন গরিবের হাড়ে
কোটি করাঘাত পৌঁছোক দ্বারে
ভীরুরা থাক।

মানবো না বাধা, মানবো না ক্ষতি,
চোখে যুদ্ধের দৃঢ় সম্মতি
রুখবে কে আর এ অগ্রগতি,
সাধ্য কার?

রুটি দেবে নাকো? দেবে না অন্ন?
এ লড়াইয়ে তুমি নও প্রসন্ন?
চোখ-রাঙানিকে করি না গণ্য
ধারি না ধার।

খ্যাতির মুখেতে পদাঘাত করি,
গড়ি, আমরা যে বিদ্রোহ গড়ি,
ছিঁড়ি দুহাতের শৃঙ্খলদড়ি,
মৃত্যুপণ।

দিক থেকে দিকে বিদ্রোহ ছোটে,
বসে থাকবার বেলা নেই মোটে,
রক্তে রক্তে লাল হয়ে ওঠে
পূর্বকোণ।

ছিঁড়ি, গোলামির দলিলকে ছিঁড়ি,
বেপরোয়াদের দলে গিয়ে ভিড়ি
খুঁজি কোনখানে স্বর্গের সিঁড়ি,
কোথায় প্রাণ!

দেখব, ওপারে আজো আছে কারা,
খসাব আঘাতে আকাশের তারা,
সারা দুনিয়াকে দেব শেষ নাড়া,
ছড়াব দান।
জানি রক্তের পেছনে ডাকবে সুখের বান।।

সুকান্ত ভট্টাচার্য
WRITTEN BY

সুকান্ত ভট্টাচার্য

সুকান্ত ভট্টাচার্য ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি কবি। তিনি ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার অন্তর্গত ঊনশিয়া গ্রামে।

সুকান্ত মাত্র ১১ বছর বয়সে কবিতা লেখা শুরু করেন। তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা "আমার গান" ১৯৩৭ সালের ২৭ অক্টোবর "কিশোর ভারতী" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ "ছাড়পত্র" ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয়।

সুকান্তের কবিতাগুলি সাধারণ মানুষের জীবন ও দুঃখ-কষ্টের কথা বলে। তিনি শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তার কবিতায় মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান উঠে এসেছে।

সুকান্ত ছিলেন একজন প্রগতিশীল কবি। তিনি মার্কসবাদী দর্শনের অনুসারী ছিলেন। তার কবিতায় শ্রমিক-কৃষকের সংগ্রাম, সামাজিক বৈষম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুর উঠে এসেছে।

সুকান্ত ভট্টাচার্য মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৯৪৭ সালের ১৩ মে টি.বি. রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের এক অপূরণীয় ক্ষতি।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের উল্লেখযোগ্য কবিতার মধ্যে রয়েছে:

* ছাড়পত্র
* পূর্বাভাস
* ঘুম নেই
* আমি একদিন তোমার নাম বলব
* কবিতা
* অগ্নিবীণা
* ময়না
* হে নমস্কার
* হে মাটি

সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতাগুলি আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। তার কবিতাগুলি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।

মন্তব্য করুন