কালজয়ী

54
0

মহাকাল হরে যাহা জরাজীর্ণ দীর্ণ পুরাতন
কাল-জয়ী সেই সত্য যাহা নিত্ত ক্ষয়হীন দীপ্ত চিরন্তন।
কীর্তি যার সুমহান, সত্য-পুত যার মহাপ্রাণ
মৃত্যু যারে শ্রদ্ধা ভরে এনে দেয় প্রচুর সম্মান।
সে মানব ক্ষণজন্মা। জনগণ নায়ক সুধীর
আপন অন্তরে ন্যায়ে বিবেকে যে আস্থাবান, স্থির।
বক্ষে যার আছে ব্যথা,মানুষের জানে পরিচয়
দুর্দিনের যাত্রীদলে পথের যে সাথী হয়ে রয়।
উৎসবে সভাতলে যে আসন সবার অগ্রণী
আনন্দের অবদানে যার কাছে সকলেই ঋণী।
গোপন দানের পুণ্যে সঞ্চয়ের শূন্য ভাণ্ড ভরে
বন্ধুর সুস্মিত হাস্যে প্রার্থীর দীনতা দেয় হরে।
জ্ঞানের প্রদীপে দিতে তৈল বিন্দু, সকলের সাথে
সে জ্ঞানীর কুণ্ঠা নাহি দাঁড়ািইতে সবার পশ্চাতে।
আজি তাই তারে স্মরি সম্ভ্রমে নমিয়া আসে শির
হারানোর ব্যথা বাজে নয়নে ঘনায় অশ্রু নীর।
সে হল অমৃত পুত্র, মৃত্যুর অমৃত করি পান
মাটির মানুষ স্মরি তারে, করে তসলীম সম্মান।

সুফিয়া কামাল
লিখেছেন

সুফিয়া কামাল

সুফিয়া কামাল একজন প্রথিতযশা বাঙালি কবি, লেখিকা, নারীবাদী ও আধুনিক বাংলাদেশের নারী প্রগতি আন্দোলনের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে খ্যাতিমান।

সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ আব্দুল বারী ছিলেন একজন শিক্ষক এবং মা সাবেরা বানু ছিলেন একজন গৃহিণী।

সুফিয়া কামাল ১৯২২ সালে সৈয়দ হোসেনকে বিয়ে করেন। তাদের এক কন্যা ছিল।

সুফিয়া কামালের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ১৯২৬ সালে। তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ছিল "আমার ছেলেবেলা"। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল:

* ঝিঙেফুলের মালা
* মায়ের কাছে
* মেয়েলি ছড়া
* কবিতাসমগ্র

সুফিয়া কামালের কবিতাগুলিতে তিনি নারীর অধিকার, নারীমুক্তি, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন। তার কবিতাগুলিতে নারীর সংগ্রাম ও আত্মবিশ্বাসের কথা ফুটে উঠেছে।

সুফিয়া কামাল ছিলেন একজন প্রগতিশীল ও আধুনিক চিন্তাবিদ। তিনি নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও রাজনৈতিক অধিকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। তিনি নারীদের আত্মবিশ্বাস ও জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করার জন্য কাজ করেছেন।

সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য করুন