কর্ষণনামা

62
0

তুমি জানো ভালো করে, কর্ষণের শেষ আছে কিনা
আরো ভালো জানো তুমি, কী চেয়েছো প্রেম না-কি ঘৃণা
আমিতো কিছুই নই, বর্গাচাষী ক্ষেত্রের মজুর
সজোরে বিঁধিয়ে ফাল চাষ করি ক্ষেত্র যত দূর
তুমি জানো কতো বার ঘোরে সীতা, কি তোমার সীমা
কী বীজ বোনাতে চাও কিসে বাড়ে তোমার মহিমা

তুমি জানো কে তোমার কর্ষিত এ ক্ষেত্রের মালিক
যে বীজ বোনাবে তাও খেয়ে যাবে সে কোন শালিক
কর্ষণেই সুখ যদি সেও শুধু একা জানো তুমি
আমার সুখের কথা না জানে তো না জানুক ভূমী

আমারো তা নিয়ে কোনো খেদ নেই, নেই আন্দোলন
যতোই শুনি না কেন উর্বরা সে ক্ষেত্রের ক্রন্দন

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান
লিখেছেন

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান একজন বাংলাদেশী গীতিকার, চলচ্চিত্রকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা এবং লেখক। তিনি ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ বেতারে গীতিকার হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে চলচ্চিত্রের জন্য গীত রচনা শুরু করেন।

রফিকউজ্জামানের লেখা গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

* "সেই রেললাইনের ধারে মেঠোপথটার পারে দাঁড়িয়ে" (গান: নীল আকাশের নীচে, চলচ্চিত্র: নীল আকাশের নীচে, ১৯৭৩)
* "ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়" (গান: ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, চলচ্চিত্র: ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, ১৯৭৭)
* "দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক" (গান: দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক, চলচ্চিত্র: দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক, ১৯৭৯)
* "কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল" (গান: কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল, চলচ্চিত্র: কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল, ১৯৮২)
* "যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে" (গান: যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে, চলচ্চিত্র: যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে, ১৯৮৩)
* "আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়" (গান: আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়, চলচ্চিত্র: আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়, ১৯৮৫)
* "আমার বাউল মনের একতারাটা" (গান: আমার বাউল মনের একতারাটা, চলচ্চিত্র: আমার বাউল মনের একতারাটা, ১৯৮৬)
* "চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ" (গান: চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ, চলচ্চিত্র: চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ, ১৯৯১)

রফিকউজ্জামান তার গানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে এবং ২০০৮ সালে শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি রাষ্ট্রপতি পদক, একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

রফিকউজ্জামানের লেখা গান বাংলা গানের ইতিহাসে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে। তার গান বাংলা সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বাংলা গানের একজন কিংবদন্তি গীতিকার।

মন্তব্য করুন