অশ্বত্থের গহীন আর্তনাদ

46
0

প্রাচীন অশ্বত্থ বৃক্ষ, হ্যা তা বটে, বৃক্ষ নাম অনায়াসে তাকেই মানায়
প্রসারিত শাখা তার জুড়ে আছে ছায়া ফেলে অনুর্বর বিস্তীর্ণ এলাকা
ছায়ায় অনেকে বসে, তাস পেটে, নিদ্রা যায়, কেউ মত্ত গঞ্জিকা টানায়
গুঁড়ি ঘেঁষে মুত্রত্যাগ করে কেউ, তবু তার নম্রতায় নির্বিকার থাকা
পেয়ে গেছে প্রাজ্ঞতার নামাবলি, দৃশ্যতও মাথা তার কিছুটা ঝুঁকেছে
নানাবিধ কর্মভারে, তবু মুখে সাঁটা আছে এঁকে রাখা আশীর্বাদী হাসি
তবে খুব অন্তরালে বার্ধক্যের কোটরে কোটরে বহু মালিন্য ঢুকেছে
এ সব ঢাকার জন্যে নাম-গান প্রয়োজন, প্রয়োজন শ্যাম-স্নিগ্ধ বাঁশি

আয়োজন কম নেই মাঝে মাঝে বসে তার ছায়াঘেরা প্রশস্ত চত্তরে
নাটকের অভিনয় স্তোত্রপাঠ মঙ্গলের গীতধ্বনি সমবেত স্বরে
কখনো সাহিত্যসভা কাব্যকৃতি, দীপান্বিতা দেহভঙ্গে কখনো বা ঝরে
বিলোল মুদ্রার ছটা, তবু বড় বিষাদের ছায়া তার নিভৃত অন্তরে
এতোটা বিস্তৃত শাখা অথচ কোথাও নেই নিজস্ব পুষ্পের সমাহার
অতি ক্ষুদ্র ফল থেকে কাক-পক্ষী বিষ্ঠা ছাড়া নেই পরিচয়ের বিস্তার

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান
WRITTEN BY

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান একজন বাংলাদেশী গীতিকার, চলচ্চিত্রকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা এবং লেখক। তিনি ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ বেতারে গীতিকার হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে চলচ্চিত্রের জন্য গীত রচনা শুরু করেন।

রফিকউজ্জামানের লেখা গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

* "সেই রেললাইনের ধারে মেঠোপথটার পারে দাঁড়িয়ে" (গান: নীল আকাশের নীচে, চলচ্চিত্র: নীল আকাশের নীচে, ১৯৭৩)
* "ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়" (গান: ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, চলচ্চিত্র: ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, ১৯৭৭)
* "দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক" (গান: দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক, চলচ্চিত্র: দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক, ১৯৭৯)
* "কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল" (গান: কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল, চলচ্চিত্র: কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল, ১৯৮২)
* "যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে" (গান: যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে, চলচ্চিত্র: যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে, ১৯৮৩)
* "আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়" (গান: আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়, চলচ্চিত্র: আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়, ১৯৮৫)
* "আমার বাউল মনের একতারাটা" (গান: আমার বাউল মনের একতারাটা, চলচ্চিত্র: আমার বাউল মনের একতারাটা, ১৯৮৬)
* "চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ" (গান: চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ, চলচ্চিত্র: চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ, ১৯৯১)

রফিকউজ্জামান তার গানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে এবং ২০০৮ সালে শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি রাষ্ট্রপতি পদক, একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

রফিকউজ্জামানের লেখা গান বাংলা গানের ইতিহাসে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে। তার গান বাংলা সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বাংলা গানের একজন কিংবদন্তি গীতিকার।

মন্তব্য করুন