মিটাতে জঠর ক্ষুধা

28
0

অন্তর তৃষা মিটাতে এনেছে মমতার মধু-সুধা?
রিক্তের প্রাণ ভরিবে কি আজ পুণ্যের আশ্বাসে?
অবহেলিতেরে ডেকে নেবে ঘরে, তাদের দীর্ঘশ্বাসে।
ব্যথিত মনের সম বেদনায় দূর করি দিয়ে প্রাণ
জুড়াবে, শুনাবে ভরসায় ভরা আগামী দিনের গান?

হে কাফেলা! তুমি চল পাঁওদল কাঁধেতে মিলায়ে কাঁধ,
পথে পথে আজ চলিছে যাহারা তাহাদের সংবাদ
লও, শোনো ঘরে কার
আজও আছে অনাহার,
তবুও ভিক্ষা মাগিতে এ পথে বাহির হবে না আর।
কত সে মাতার সন্তান আজও রহিয়াছে কারাগারে-
শোন ফরিয়াদ, মাথা কুটে বারে বারে
পাষাণ প্রাচীর ভাঙ্গিতে পারেনি যারা
ঈদের খুশী কি ঘরে আনিয়াছে তারা?
তাদের অশ্রু মুছাতে তোমরা যাত্রীরা কর পণ,
আজকে দিনের শপথ রহুক বেদনায় ভরা মন।
উৎসব তোলো সার্থক করে তাহাদের আঁখিজল
মুছায়ে, আবার আগামী দিনেতে মেলি আনন্দ দল।

সুফিয়া কামাল
লিখেছেন

সুফিয়া কামাল

সুফিয়া কামাল একজন প্রথিতযশা বাঙালি কবি, লেখিকা, নারীবাদী ও আধুনিক বাংলাদেশের নারী প্রগতি আন্দোলনের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে খ্যাতিমান।

সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ আব্দুল বারী ছিলেন একজন শিক্ষক এবং মা সাবেরা বানু ছিলেন একজন গৃহিণী।

সুফিয়া কামাল ১৯২২ সালে সৈয়দ হোসেনকে বিয়ে করেন। তাদের এক কন্যা ছিল।

সুফিয়া কামালের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ১৯২৬ সালে। তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ছিল "আমার ছেলেবেলা"। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল:

* ঝিঙেফুলের মালা
* মায়ের কাছে
* মেয়েলি ছড়া
* কবিতাসমগ্র

সুফিয়া কামালের কবিতাগুলিতে তিনি নারীর অধিকার, নারীমুক্তি, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন। তার কবিতাগুলিতে নারীর সংগ্রাম ও আত্মবিশ্বাসের কথা ফুটে উঠেছে।

সুফিয়া কামাল ছিলেন একজন প্রগতিশীল ও আধুনিক চিন্তাবিদ। তিনি নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও রাজনৈতিক অধিকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। তিনি নারীদের আত্মবিশ্বাস ও জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করার জন্য কাজ করেছেন।

সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য করুন