উপাত্তের সন্ধানে

21
0

আদ্যপ্রান্ত কোনোখানে দেহকাব্যে পাবে না তো অনায়াস পাঠ
মস্তিষ্কের সূক্ষ্মতম তন্ত্রীতেও ঘটে গেলে হঠাত বিভ্রাট
প্রেমিক লম্পট হয় প্রেমিকাও হতে পারে সেরেফ পতিতা
দৃষ্টির বিভ্রম নিয়ে কেটে গেলে জন্ম থেকে কবর বা চিতা
অপঠিত থেকে যায় দেহকাব্যে সর্গ – অনুসর্গ – পাদটিকা
অথবা মুহূর্তে কোনো সংঘটিত অনুকাব্য – ক্ষুদ্রাঙ্ক নাটিকা —
লুকানো বিদ্যুৎ কোনো, ভ্রূকম্পে ভূকম্প কোনো যদি অগোচরে
ঘটে যায় তাহলেই ভুল অংক লেখা হবে শাস্ত্রের আকরে

দেহকাব্যে অনায়াস পাঠ নেই — তবু দেখি নিত্য আয়োজন
ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করা মগজের খোঁয়ারিতে হাতড়ে ফেরে ধন
বোঝে না কোথায় ভুল, দেহের ভিতরে দেহ, কিসের সন্ধান —
গানের ভঙ্গিতে শুধু স্বরযন্ত্র গোঙানিতে মুখের ব্যাদান
বিপর্যস্ত করে দেয় সুরে স্বরে তত্বে সত্তে বাণীর বিন্যাস
হাজার বিচ্যুতি নিয়ে, নামে শুধু সাধু থাকে, কামে হয় দাস
কাব্য হয়ে যায় পণ্য, কিনে খায় নাগরিক শিশ্ন কিম্বা যোনি
দেহের খোলস তাই বাজারের প্রান্তে পড়ে হারায় লাবনী

আসলে এ দেহকাব্যে সত্যের সন্ধান খুঁজে পেয়েছে ক’জন
এ প্রশ্ন বাতাসে ঘোরে, জবাব দেবেন কোন সাঁইজ্বী স্বজন

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান
লিখেছেন

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান একজন বাংলাদেশী গীতিকার, চলচ্চিত্রকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা এবং লেখক। তিনি ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ বেতারে গীতিকার হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে চলচ্চিত্রের জন্য গীত রচনা শুরু করেন।

রফিকউজ্জামানের লেখা গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

* "সেই রেললাইনের ধারে মেঠোপথটার পারে দাঁড়িয়ে" (গান: নীল আকাশের নীচে, চলচ্চিত্র: নীল আকাশের নীচে, ১৯৭৩)
* "ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়" (গান: ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, চলচ্চিত্র: ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, ১৯৭৭)
* "দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক" (গান: দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক, চলচ্চিত্র: দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক, ১৯৭৯)
* "কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল" (গান: কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল, চলচ্চিত্র: কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল, ১৯৮২)
* "যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে" (গান: যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে, চলচ্চিত্র: যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে, ১৯৮৩)
* "আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়" (গান: আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়, চলচ্চিত্র: আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়, ১৯৮৫)
* "আমার বাউল মনের একতারাটা" (গান: আমার বাউল মনের একতারাটা, চলচ্চিত্র: আমার বাউল মনের একতারাটা, ১৯৮৬)
* "চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ" (গান: চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ, চলচ্চিত্র: চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ, ১৯৯১)

রফিকউজ্জামান তার গানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে এবং ২০০৮ সালে শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি রাষ্ট্রপতি পদক, একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

রফিকউজ্জামানের লেখা গান বাংলা গানের ইতিহাসে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে। তার গান বাংলা সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বাংলা গানের একজন কিংবদন্তি গীতিকার।

মন্তব্য করুন