বহুদিন পর সেদিন হিমেল রাতে
ছিলাম দু’জন নিঝুম কাফেতে ব’সে।
কফির পেয়ালা ছিল সম্মুখে রাখা,
মুহূর্তগুলো পড়ছিল মৃদু খ’সে।
কথোপকথনে আমরা উঠি নি মেতে,
হয়েছে কেবল দৃষ্টির বিনিময়।
তার হাত আর আমার হাতের মাঝে
ছিল কবোষ্ণ ঘনিষ্ঠ পরিচয়।
অনুরাগে তার দৃষ্টি যখন কাঁপে
হাওয়ায় মোমের নবীন আলোর মতো,
হৃদয়ে আমার জলতরঙ্গ বাজে,
করোটিতে ফোটে শত তারা অবিরত।
রাস্তার পিঠে হাওয়ায় চাবুক পড়ে;
আমাদের মনে কত অনুক্ত কথা।
তার অন্তরে গুপ্ত কী আছে আজও,
আমি বই সব জানবার ব্যাকুলতা।
বাধা সত্ত্বেও পেয়েছি মিলন-সুখ,
অমাবস্যায় জ্বলেছে তো পূর্ণিমা।
হিংসুটে সব মনের বিকার থাকে
রেখেছি মুক্ত স্বপ্ন-সাধের সীমা।
কিন্তু এখন ভূমিকম্পের পরে
মনে হানা দেয় বারবার কী যে ত্রাস!
প্রেমময় এই মধুর ক্ষণেও ভাবি-
ভয়াবহ কিছু করবে কি সব গ্রাস?
আমাদের মুখে যুগের করাল ছায়া,
স্মৃতিতে পুরাণ-প্রাণীদের হিংস্রতা।
শিকারি কুকুর নিত্য করছে তাড়া,
বারবার থাবা মেলেছে বর্বরতা।
নিঝুম কাফেতে আছি তার মুখোমুখি,
তবুও নিজেকে লাগে অসহায়, একা।
ব্যাপক আঁধারে এইটুকু দীপশিখা-
যুগসঙ্কটে তার সাথে হ’ল দেখা।