আমাদের স্বপ্নগুলো
এইভাবে ঠুকরে ঠুকরে খাবে কাক ও শকুন।
আমাদের আকাংখারা
মুখ থুবড়ে পড়বে জমকালো পিচের রাস্তায়।
একাকি বান্ধবহীন আমাদের হৃদপিন্ড জুড়ে ধংশস্তুপ
জ’মে উঠতে থাকবে ব্যাংকে সঞ্চিত টাকার মতো।
আমাদের চরমপন্থি ফুসফুসের জন্যে প্রয়োজন
আজ একটু নির্মল বাতাসের ছোঁয়া,
প্রয়োজন এক টুকরো সজীব ভালোবাসা।
আমাদের সন্ত্রস্ত, সশস্ত্র মস্তিষ্কের জন্যে প্রয়োজন
সামান্য আশ্রয়,
অমলিন, একটু স্নেহের টোকা।
না আমাদের স্বপ্নকে, না সংবিধানকে
আমরা কিছুই, কাউকেই বাঁচিয়ে রাখতে পারছি না।
আমরা ধ’রে রাখতে পারছি না আমাদের
সময়ের বেগবান স্রোতগুলো,
স্বপ্নবান প্রাণবন্ত আত্মাগুলো—
কবরের সুবিশাল নির্জনতা আজ নেমে এসেছে এখানে,
এই গ্রহে।
আমাদের স্বপ্নগুলো অপ্রচলিত পথে ছুটতে চায়,
তাই রক্তাক্ত তার পা,
আঘাতে বিক্ষত দেহ,
তবু সে ছুটছে—
প্রতারনাহীন আমাদের বিশ্বাসের বিক্ষুব্ধ আগুন,
অন্ধকার পোড়াতে পারেনি বোলে আজ
নিজেই সে নিজেকে পোড়ায়।
প্রলোভনহীন ভালোবাসা আমাদের
প্রতিবার রক্তাক্ত হচ্ছে বিত্তের বিনাশী চাকায়।
আমাদের রক্তস্রোতে প্রবাহিত হচ্ছে
পল্যুটেড পৃথিবীর ক্ষমাহীন বিষ।
এ্যালকোহল ঝাঁপিয়ে পড়ছে যকৃতে,
নিরন্ন পাকস্থলিতে।
নিকোটিনে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে
রক্ত প্রবাহিনী নালীগুলো।
আমাদের স্বপ্নময় আন্দোলনগুলো
বারবার বুটে ও বুলেটে, আপোসে ও ষড়যন্ত্রে
ঝিমিয়ে পড়ছে।
শাদা একটি গোলাপ আমাদের অন্তর্গত স্বপ্ন,
সমতার এক নীল আকাশের স্বপ্ন আমাদের,
আমাদের স্বপ্ন শ্রমময় একটি দিনের,
সম্মিলিত নৃত্য আর গানে উন্মাতাল
একটি সন্ধ্যার স্বপ্ন আমাদের,
আমাদের স্বপ্ন এক প্রশান্ত নিদ্রার রাত—
অথচ কোথাও তার কনামাত্র ছায়া নেই, চিহ্ন নেই,
স্বপ্নের সূচনা নেই এখনো কোথাও।
আমাদের স্বপ্নগুলো ঠুকরে ঠুকরে খাচ্ছে কাক ও শকুন।