এতোকাল ধ’রে শুধু আকাশ মেঘলা হয় নামে না বাদল,
নাড়ি-ছেঁড়া ব্যথা ওঠে, কাতরায় খালি ঘরে চুড়ান্ত পোয়াতি।
পশ্চিমের মেঘ দেখে হাটবারে দোকানিরা গুটায় বেসাতি,
বরষা আসে না-শুধু মেঘ জ’মে ওঠে, বাজে মেঘের মাদল।
সময় গড়ায় আর ভাঙা ঘরে চলে রোজ মৃত্যুর মহড়া।
আমাদের স্বপ্নগুলো ক্রমশ ঝিমায়ে পড়ে বয়সের ভারে,
ভরা পূর্নিমায় কেউ আঙুল রাখে না আর দোতারার তারে,
ঘানির জোয়াল টানে একদার স্বপ্নবান প্রানবন্ত ঘোড়া।
বাওয়ালীর দুঃখ বোঝে বাদাবনে জোংড়াখুটা, জেলে ও মৌয়াল,
জনপদে তারা আর চেনে না নিজের মুখ। আলাদা মানুষ
তারা সব বিষের আগুনে পোড়া বিষমগ্ন মালশার তুষ,
পোড়ায় অন্যের ঘর, আর পোড়ে নিজে নিজে দগ্ধ চিরকাল।
আমরা দেখিনি আর পরষ্পর হাত খুলে গাঢ় কোনো সাঁঝে,
প্রতিটি হাতের তালু এক চিহ্ন ধ’রে আছে দেখি নাই কেউ।
পরষ্পর চেয়ে থেকে দেখি নাই সবার বুকেই এক ঢেউ,
সবার একই মুখ, সবার একই ভাষা চামড়ার ভাঁজে।
বড়শির সুতো ধরে অন্ধকারে বোসে থাকে রুগ্ন এক জেলে,
মাছের খোয়াব তার চোখের পিঁচুটি হয়ে ঢেকে রাখে চোখ।
বুকে তার ক্ষুধায় খরায় পোড়া দূরবর্তী স্বজনের শোক-
এক জেলে চায় যেন নিখিল ধোয়াতে তার নম্র স্বপ্ন ঢেলে॥