যাত্রাভঙ্গ

88
0

হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে
মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না
এক কে করি দুই।

হেমের মাঝে শুই না যবে,
প্রেমের মাঝে শুই
তুই কেমন করে যাবি?
পা বাড়ালেই পায়ের ছায়া
আমাকেই তুই পাবি।

তবুও তুই বলিস যদি যাই,
দেখবি তোর সমুখে পথ নাই।

তখন আমি একটু ছোঁব
হাত বাড়িয়ে জড়াব তোর
বিদায় দুটি পায়ে,
তুই উঠবি আমার নায়ে,
আমার বৈতরণী নায়ে।

নায়ের মাঝে বসবো বটে,
না-এর মাঝে শোবো,
হাত দিয়েতো ছোঁব না মুখ
দুঃখ দিয়ে ছোঁব।

নির্মলেন্দু গুণ
লিখেছেন

নির্মলেন্দু গুণ

নির্মলেন্দু গুণ, একজন বাংলাদেশী কবি, গীতিকার, সাংবাদিক এবং চিত্রশিল্পী। তিনি ১৯৪৫ সালের ২১ জুন নেত্রকোনার বারহাট্টায় জন্মগ্রহণ করেন।

গুণ ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি সাংবাদিকতায় তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক বাংলা পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখেন।

গুণ একজন প্রতিভাবান কবি এবং তার কবিতা বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে। তার কবিতায় নারীপ্রেম, শ্রেণীসংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধিতা প্রভৃতি বিষয়বস্তু প্রাধান্য পায়। তার উল্লেখযোগ্য কবিতার মধ্যে রয়েছে “হুলিয়া”, “মানুষ”, “আফ্রিকার প্রেমের কবিতা”, “একটি অসমাপ্ত কবিতা” ইত্যাদি।

গুণ একজন জনপ্রিয় গীতিকারও। তিনি অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের গান রচনা করেছেন। তার রচিত গানগুলির মধ্যে রয়েছে “ওরে সোনা রোদ্দুর”, “ওরে নীল দরিয়া”, “আমি তোমার প্রেমে বলব না” ইত্যাদি।

গুণ তার সাহিত্যকর্মের জন্য অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (শ্রেষ্ঠ গীতিকার) লাভ করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন।

গুণ একজন সমাজসেবক ব্যক্তিও। তিনি অনেক সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন। তিনি বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির বিকাশে বিশেষ অবদান রেখেছেন।

মন্তব্য করুন