শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে—
বলিলাম—‘একদিন এমন সময়
আবার আসিও তুমি—আসিবার ইচ্ছা যদি হয়—
পঁচিশ বছর পরে।’
এই ব’লে ফিরে আমি আসিলাম ঘরে;
তারপর, কতোবার চাঁদ আর তারা
মাঠে-মাঠে ম’রে গেল, ইঁদুর-পেঁচারা
জ্যোৎস্নায় ধানখেত খুঁজে
এলো গেল; চোখ বুজে
কতোবার ডানে আর বাঁয়ে
পড়িল ঘুমায়ে
কতো-কেউ; রহিলাম জেগে
আমি একা; নক্ষত্র যে-বেগে
ছুটিছে আকাশে
তার চেয়ে আগে চ’লে আসে
যদিও সময়,
পঁচিশ বছর তবু কই শেষ হয়!
তারপর—একদিন
আবার হলদে তৃণ
ভ’রে আছে মাঠে,
পাতায়, শুকনো ডাঁটে
ভাসিছে কুয়াশা
দিকে-দিকে, চড়ুয়ের ভাঙা বাসা
শিশিরে গিয়েছে ভিজে—পথের উপর
পাখির ডিমের খোলা, ঠাণ্ডা—কড়্কড়্;
শসাফুল—দু-একটা নষ্ট শাদা শসা,
মাকড়ের ছেঁড়া জাল—শুক্নো মাকড়সা
লতায়—পাতায়;
ফুটফুটে জ্যোৎস্নারাতে পথ চেনা যায়;
দেখা যায় কয়েকটা তারা
হিম আকাশের গায়—ইঁদুর-পেঁচারা
ঘুরে যায় মাঠে-মাঠে, খুদ খেয়ে ওদের পিপাসা আজো মেটে,
পঁচিশ বছর তবু গেছে কবে কেটে!