archive hero image

ছোটগল্প

5 articles
ছোটগল্প হলো কথাসাহিত্যের একটি বিশেষ রূপবন্ধ যা দৈর্ঘ্যে হ্রস্ব এবং একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। ছোটগল্পের আকার কী হবে সে সম্পর্কে কোন সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেই। তবে সাধারণত ছোটগল্প ২০০০ থেকে ১০০০০ শব্দের মধ্যে দীর্ঘ হয়। ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যগুলি হলো: সংক্ষিপ্ততা: ছোটগল্পের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর সংক্ষিপ্ততা। ছোটগল্পে একটি নির্দিষ্ট ঘটনা বা চরিত্রকে কেন্দ্র করে একটি সুসংগত কাহিনী বর্ণিত হয়। একক কাহিনী: ছোটগল্পে একটিমাত্র কাহিনী থাকে। ছোটগল্পে একাধিক কাহিনী বা চরিত্র থাকতে পারে, কিন্তু এগুলি একটি মূল কাহিনীর মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হবে। শক্তিশালী প্রভাব: ছোটগল্পের সংক্ষিপ্ততার কারণে, এটি পাঠকের কাছে দ্রুত এবং শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে পারে। অস্পষ্টতা: ছোটগল্প প্রায়ই কিছুটা অস্পষ্ট রেখে দেয়, পাঠককে কল্পনা করার এবং নিজেদের অর্থ বুঝতে সাহায্য করে। ভিন্ন ধরন: ছোটগল্প বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন বাস্তব, কাল্পনিক, হাস্যরসাত্মক, নাটকীয়, সামাজিক, ঐতিহাসিক বা বিজ্ঞানভিত্তিক। ছোটগল্পের উদাহরণ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "পোস্টমাস্টার" শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের "পণরক্ষা" মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "কালবেলা" সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত "অগ্নিশিখা" হুমায়ুন আহমেদের "চতুরঙ্গ" ছোটগল্পের গুরুত্ব: ছোটগল্প, সংক্ষিপ্ত হওয়া সত্ত্বেও, পাঠকদেরকে জীবন, মানুষ এবং বিশ্ব সম্পর্কে নতুন চিন্তা করার সুযোগ দেয়। এগুলি বিনোদন দেয়, শিক্ষা দেয় এবং শক্তিশালী অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। ছোটগল্পের বিবর্তন: ছোটগল্পের ইতিহাস প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে। প্রাচীন গ্রীস, রোম, ভারত, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশে ছোটগল্পের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে আধুনিক ছোটগল্পের সূচনা হয় ১৯ শতকের শেষভাগে। এই সময়ে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, রাশিয়া প্রভৃতি দেশে ছোটগল্পের বিকাশ ঘটে। বাংলা ভাষায় ছোটগল্পের বিকাশ ঘটে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই প্রথম সার্থকভাবে বাংলা ছোটগল্পকে বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেন। রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা ছোটগল্পে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ মুজতবা আলী, হুমায়ুন আহমেদ প্রমুখ লেখকদের অবদান উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে বাংলা ভাষায় ছোটগল্পের বিকাশ অব্যাহত রয়েছে। নতুন নতুন লেখকদের আবির্ভাব ঘটছে। ছোটগল্প এখন শুধু সাহিত্যের একটি শাখা নয়, এটি হয়ে উঠেছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মাধ্যমও।