অকস্মাৎ কাল রাতে মরে গেছে পূর্ণিমার চাঁদ।
আকাশের কোথাও নক্ষত্রেরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নেই,
পৃথিবীকে গ্রাস করেছে ভয়াল অন্ধকার—
তার বিশাল থাবায় হরিণের কোমল মাংসের মতো ঝুলে আছে
জ্যোৎস্নার আলো—বাতাসের ঘায়ে কেঁপে উঠে
লাফিয়ে পড়ছে অন্ধকারের ভেতরে—
যেন সমুদ্রের মধ্যে সজোরে নিক্ষিপ্ত
ক্ষুদ্রাকার একটি মাটির ঢেলা সামান্য আঘাত হেনে
মিলিয়ে গেলো অথৈ জলের নিচে।
আমার চোখ দু’টি বিস্ফারিত।
বেদনায় ক্রমশ নীল হয়ে উঠছে শিরা-উপশিরা।
বুকের ভেতরে ঘূর্ণিবাত্যার মতো জমে আছে গভীর বিষাদ;
একমাত্র অন্ধকার ছাড়া কিছুই চোখে ভাসছে না।
কৃষ্ণসাগরের তীরে দাঁড়িয়ে একটি ভোরের প্রতীক্ষায়
কেটে যাচ্ছে ব্যথিত প্রহর
ঠিক তখনই অন্ধকার ভেদ করে স্ফুরিত আলোর মতো
বেরিয়ে আসছে তোমার মুখ;
উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের মতো সেই মুখ একটি তীব্র আলোকপিণ্ড হয়ে
পৃথিবীকে ভাসিয়ে দিচ্ছে আলোর বন্যায়;
চোখ-ধাঁধানো সেই আলোতে স্নিগ্ধ হয়ে উঠছে মাটি;
কৃষ্ণসাগরের তীরে দাঁড়িয়ে
জ্যোৎস্নার আলোয় ভিজতে ভিজতে বারবার মনে হচ্ছে :
তোমার মুখের মতো এ রকম চাঁদ আমি এ জীবনে কখনো দেখিনি!