একবার এক রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে
একটি ট্রেনের জানালায় তোমাকে দেখেছিলাম—
গায়ে পশমি-চাদর, চোখে হালকা-রঙের সানগ্লাস
তোমার সমুদ্রের মতো গভীর দৃষ্টি—
হয়তো বা আমার দিকেই!
মনে হলো, তুমি ইশারায় ডাকছো আমাকে।
আমার চোখ দু’টো জানালায় স্থির,
পৃথিবীর সব কোলাহল
অকস্মাৎ আফ্রিকার নির্জন বনভূমি হয়ে গেলো;
সব মানুষ এখন অপার স্তব্ধতায় নির্বাক।
এখানে আর কোনোদিন গার্ডের হুঁইসেল বাজবে না
প্ল্যাটফর্মের কাউন্টার থেকে
কোনোদিন বিক্রি হবে না কোনো টিকিট
যাত্রীরা লাগেজসহ ফিরে যাবে যার-যার ঘরে;
শুধু লাইনে দাঁড়ানো একটিমাত্র ট্রেন আমার চোখের সামনে
চিরকালের জন্যে অপেক্ষা করবে;
শুধু তুমি ছাড়া ট্রেনের সব কামরা থেকে
সকলেই একে-একে নেমে যাবে এখানে-ওখানে।
আর আমি বিশ্বজয়ী কোনো এক সম্রাটের মতো
একটি কবোষ্ণ ঠোঁটে
খুব সজোরে চেপে ধরবো আমার এই তৃষ্ণার্ত ঠোঁট;
আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরবো চুম্বকের মতো।
চতুর্দিকে অন্ধকার নেমে আসবে
সারা পৃথিবী ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়বে
কিন্তু আমরা আমাদের আলিঙ্গনাবদ্ধ দুই ঠোঁট
পরস্পর চেপে রাখবো ততোদিন
যতোদিন না আমাদের যৌবন শেষ হয়ে যায়!
অথচ ইস্পাতের অনেকগুলো চাকায়
আমার একটিমাত্র বাসনা মাড়াতে-মাড়াতেই
তুমি কী অনায়াসে সুদূরের দিকে চলে গেলো!
তবে সেদিন, কেন তুমি ও-রকম সাড়া দিয়েছিলে?