হযরত মোহাম্মদ

60
0

(আল্লাহ্-র করুণা বর্ষিত হোক তাঁর ওপর)

গভীর আঁধার কেটে ভেসে ওঠে আলোর গোলক,
সমস্ত পৃথিবী যেন গায়ে মাখে জ্যোতির পরাগ ;
তাঁর পদপ্রান্তে লেগে নড়ে ওঠে কালের দোলক
বিশ্বাসে নরম হয় আমাদের বিশাল ভূভাগ।

হেরার বিনীত মুখে বেহেস্তের বিচ্ছুরিত স্বেদ
শান্তির সোহাগ যেন তাঁর সেই ললিত আহবান,
তারই কড়াঘাতে ভাঙে জীবিকার কুটিল প্রভেদ
দুঃখীর সমাজ যেন হয়ে যাবে ফুলের বাগান।

লাত-মানাতের বুকে বিদ্ধ হয় দারুণ শায়ক
যে সব পাষাণ ছিল গঞ্জনার গৌরবে পাথর
একে একে ধসে পড়ে ছলনার নকল নায়ক
পাথর চৌচির করে ভেসে আসে ঈমানের স্বর।

লাঞ্ছিতের আসমানে তিনি যেন সোনালী ঈগল
ডানার আওয়াজে তার কেঁপে ওঠে বন্দীর দুয়ার ;
ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় জাহেলের সামান্য শিকল
আদিগন্ত ভেদ করে চলে সেই আলোর জোয়ার।

আল মাহমুদ
লিখেছেন

আল মাহমুদ

আল মাহমুদ ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক। তিনি একাধারে ছিলেন একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক। তিনি ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মসজিদবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মীর আবদুল হাই এবং মাতার নাম মরিয়ম খাতুন।

তিনি ১৯৫৪ সালে সাপ্তাহিক কাফেলা পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ "লোক লোকান্তর" প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থের জন্য তিনি ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে "কালের কলস" (১৯৬৬), "সোনালী কাবিন" (১৯৭৩), "মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো" (১৯৭৮), "নিরালা ঘাটের ঐ বিদায়" (১৯৮৪), "কবর থেকে উঠে আসা" (১৯৯০), "আবার শরৎ এলো" (১৯৯৭), "সোনালি কাবিনের উপকথা" (২০০২)।

আল মাহমুদ তার কাব্যে বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি তার কবিতায় প্রকৃতির সৌন্দর্য, প্রেম, ভালোবাসা, বিরহ, দুঃখ, ক্ষোভ, আশা, স্বপ্ন ইত্যাদি নানামুখী অনুভূতিকে প্রকাশ করেছেন।

তিনি একজন প্রগতিশীল কবি। তার কবিতায় তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক অনাচার, অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুর উচ্চারণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

আল মাহমুদ তার কবিতা ও সাহিত্যকর্মের জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তার উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে:

* একুশে পদক (১৯৮৬)
* বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮)
* মরহুম মওলানা আবুল কালাম আজাদ পুরস্কার (১৯৭৪)
* হুমায়ুন কাদির সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২)
* নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৮৮)
* স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৩)

আল মাহমুদ ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে বিবেচিত। তার কবিতা ও সাহিত্যকর্ম বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অমূল্য অবদান রেখেছে।

মন্তব্য করুন