আমার শৈশবে নাকি মাকে ডেকে বলেছিলো ময়াজ ফকির:
সেরেক বিন্নির সাথে নবান্নের ক্ষীর
রেঁধে শিন্নি দিবি খুশিমনে বাবার দরগায়;
সেখানে যে আধল্যাংটা পাগলাটা নিজহাতে ক’ষে চড় খায়
গাউসুল আজমের দিদার পায়নি বলে,
কখনো উদাস ব’সে খোলামেলা আকাশের তলে
“রে দয়াল, আটকে আছি ভবানীর হাটে”
ব’লে উল্টোপাল্টা গান গায় শেওলা-পড়া পুকুরের ঘাটে
উদোম ছেলেকে দিয়ে কোনোমতে ছুঁয়ে নিস্ তাকে….
অথচ বোঝেননি তিনি অছিলার গৈবী এনে বানালেন কাকে!
আরে! এ তো সেই দরগা-তলার ভাঙা শানের চাতালে-বসা ল্যাংটাটারই মতো!
ঝিনুকের ঢঙে পরানটা খুলে সোনার পেরেকে করছে আহত
নিজেকেই। হায় হায়, মানুষের মেল থেকে পরিত্যক্ত প্রায়
তুমুল বিষয়ী-রণে রাস্তার পঙ্গুটা তার ছেলেকে ডিঙিয়ে যায়।
এদিকে দরগার চেয়ে আরো বেশি রহস্যখচিত পরীর কাঁকালে
ছেলে তার ঘোরে-ফেরে; ঘুমে নয়, স্বপ্নে নয়, বিশুদ্ধ সকালে
দেখে সূর্য ভেঙে খান খান – কেঁপে ওঠে গোপন সন্ত্রাসে;
কখনো নিজেরই কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসে!
নরকের ফেরেস্তার মতো গনগনে বয়লার ঘেঁটে
তুলে আনে আগুনের ফুল, নাকি তারই আত্মাটা কেটে
মুক্তোর দানার মতো উলুবনে ছড়াবার দায়িত্ব নিয়ছে সে!
তাকে দেখে হে হে
ক’রে হাসে কিছু বুদ্ধিমান প্রাণী; ভণ্ড আলোচক
টিকা ও টিপ্পনি কাটে: এ যে দেখি হংসপালে বক
যথা গুণবান কবি,
চাঁড়ালের বাচ্চা হয়ে এ-ও দেখি হতে চায় শাশ্বতের নবী!
কখনো ঘুণের মতো কাটে তার শব্দাবলি নিজেরই অহং,
প্রায়শ আকাশ ফুঁড়ে দাঁতহীন ভেংচি কাটে ময়াজ স্বয়ং।